পবিত্র কুরআন শরীফের প্রাচীনতম একটি পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে ব্রিটেনে। 

প্রায় ১০০ বছর ধরে এ পাণ্ডুলিপি বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডবেরি রিসার্চ লাইব্রেরিতে ছিল। মধ্যপ্রাচ্যসংক্রান্ত বেশ কিছু পাণ্ডুলিপির সাথে ছিল এ পাণ্ডুলিপিও। নিতান্ত কৌতূহলের বশেই পিএইচডি গবেষক আলবা ফেদেলি পাণ্ডুলিপিটি দেখার পর তার মনে সন্দেহ বাসা বাধে । অতঃপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত রেডিওকার্বন অ্যাকসিলারেটর ইউনিটে পাণ্ডুলিপিটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। 

পবিত্র কুরআন শরীফের প্রাচীনতম একটি পাণ্ডুলিপি


দেখা যায়, দুই পাতার পার্চমেন্টের ওপর লেখা পাণ্ডুলিপিটির বয়স প্রায় ১,৩৭০ বছর। 'হিজাজি' লিপিতে লেখা পৃষ্ঠা দুটি স্পষ্ট পড়াও যাচ্ছে। হিজাজি লিপি হলো, আরবি ভাষার পুরানো লেখ্যরূপ। মূলত ৫৬৮-৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে পশুর চামড়া বা পার্চমেন্টে লেখা হতো। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওকার্বন অ্যাকসিলারেটর ইউনিটের পরীক্ষায় দেখা গেছে, উক্ত পৃষ্ঠা দুটিতে ভেড়া কিংবা ছাগলের চামড়ায় পবিত্র কুরআনের বাণীগুলো হাতে লেখা হয়েছিল। রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে পাওয়া ফলাফল নির্দিষ্টভাবে ঠিক কোন বছর পাণ্ডুলিপিটি লেখা হয়েছে, তা বলতে পারেনি। তবে এ ক্ষেত্রে ৫৬৮-৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই যে পাণ্ডুলিপিটির এ অংশ লেখা হয়েছে, তার সম্ভাবনা প্রবল বলে জানান গবেষকরা।


অ্যাডওয়ার্ড ক্যাডবেরির আর্থিক সাহায্যে পাদ্রি অ্যালফন্স মিনগানা ১৯২০ সালে মধ্যপ্রাচ্য থেকে স্থানীয় নানা বিষয়ের প্রায় তিন হাজার পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেছিলেন। সেগুলো বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে রাখা ছিল। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। গবেষকদের মতে, এর মানে যিনি পাণ্ডুলিপিটির এ অংশ লিখেছেন তিনি মুহাম্মদ (স)কে জীবিত অবস্থায় দেখেছিলেন। হতে পারে, তার প্রচারও তিনি শুনেছেন। এমনও হতে পারে, এ ব্যক্তি মুহাম্মদ (স)-এর পরিচিত ছিলেন। তবে আবিষ্কৃত পাণ্ডুলিপিটি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মৃত্যুর পরও লেখা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক টমাস। তিনি জানান, কুরআনের কিছু অংশ পার্চমেন্ট, পাথর, খেজুরের পাতা ও উটের হাড়ের দ্বারা লেখা হয়েছিল। আর পুস্তক আকারে কুরআন লেখার কাজ শেষ হয় ৬৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ।