Ad Code

Responsive Advertisement

অমর ২১শে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের ইতিহাস

অমর ২১শে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস


রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৪৭ সাল থেকে বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে চূড়ান্ত রূপ লাভ করে বায়নের ২১ ফেব্রুয়ারি। পাকিস্তান সংবিধানে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬। দীর্ঘ সংগ্রামের পর অর্জিত হয় মায়ের ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা, আর এই ভাষা আন্দোলনের সাফল্যের পর ধরেই রোপিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের বীজ। মহান ভাষা আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ দিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের আয়োজন।

২১শে ফেব্রুয়ারি


তমদ্দুন মজলিস গঠন ও প্রথম পুস্তিকা প্রকাশ : 

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর সর্বপ্রথম ভাষা-আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে ‘তমদ্দুন মজলিস' নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাধ্যমে। ১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের উদ্যোগে ও নেতৃত্বে এ সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করে। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ তমদ্দুন মজলিস ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে? বাংলা নাকি উর্দু?’ নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যেখানে সর্বপ্রথম বাংলাকে পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি করা হয়। এটিই ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ। 


 রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন : 

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় গঠিত একটি সংগঠন। পাকিস্তান সরকারের নিকট থেকে বাংলা ভাষার মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে বাঙালি রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১ অক্টোবর ১৯৪৭। বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় এটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তমদ্দুন মজলিস প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। প্রথম প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন নূরুল হক ভূঁইয়া। অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে ছিলেন শামসুল আলম, আবুল খায়ের, আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী এবং অলি আহাদ। পরবর্তীতে এই কমিটি সম্প্রসারণ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে এই কমিটির সকল ধরনের কর্মকাণ্ড গোপনে পরিচালনা করা হতো।


গণপরিষদে বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি : 

২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাকে গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহার করার প্রস্তাব দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম লীগ সদস্যদের বিপক্ষে অবস্থানের কারণে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়। 


সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন : 

ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ২ মার্চ ১৯৪৮ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে অনুষ্ঠিত তমদ্দুন মজলিস ও পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের এক যৌথ সভায় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পুনর্গঠন করে প্রথম ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। ১৫ মার্চ ১৯৪৮ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পূর্ব পাকিস্তান সফরের প্রাক্কালে বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাজা নাজিমুদ্দিন স্টুডেন্টস অ্যাকশন কমিটির সাথে একটি বৈঠকে বসেন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার একটি অঙ্গীকারনামা সই করেন। পরবর্তীতে জিন্নাহ এই অঙ্গীকারনামা বাতিল করেন এবং উর্দুকে (যা ছিল ৫% মানুষের মাতৃভাষা) পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে তদানীন্তন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সাথে ৮ দফা চুক্তি করে। তবে চুক্তিতে বাঙালিদের ভাষার দাবি কোনোভাবেই মেনে নেয়নি। 


মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘোষণা : 

২১ মার্চ ১৯৪৮ রেসকোর্স ময়দানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর পূর্ব পাকিস্তান সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি বিশাল সমাবেশে জিন্নাহ স্পষ্ট ঘোষণা করেন “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”। সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছাত্র নেতৃবৃন্দ ও জনতার একাংশ সাথে সাথে তার প্রতিবাদ করে ওঠে। তিনি সেই প্রতিবাদকে আমলে না নিয়ে বক্তব্য অব্যাহত রাখেন। ২৪ মার্চ ১৯৪৮ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ “স্টুডেন্টস রোল ইন নেশন বিল্ডিং” শিরোনামে একটি ভাষণ প্রদান করেন। সেখানে তিনি স্পষ্টভাবে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবিকে নাকচ করে দিয়ে বলেন “পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে একটি এবং সেটি উর্দু একমাত্র উর্দুই পাকিস্তানের মুসলিম পরিচয়কে তুলে ধরে” জিন্নাহর এই বক্তব্য সমাবর্তনস্থলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং স্টুডেন্টস অ্যাকশন কমিটির সদস্যরা দাঁড়িয়ে 'নো নো’ বলে প্রতিবাদ করেন। জিন্নাহর এই বাংলাবিরোধী স্পষ্ট অবস্থানের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলন আরো বেশি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে এবং আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।


সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন : 

৩০ জানুয়ারি ১৯৫২ ঢাকা বার লাইব্রেরিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে এক প্রতিনিধি সভায় 'সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ' গঠি হয়। যার সভাপতি ছিলেন গোলাম মাহবুব। সভায় ২১ ফেব্রুয়ারিতে সমগ্র পাকিস্তানে সাধারণ হরতাল, সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । 


ঢাকায় সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ ও ১৪৪ জারি : 

২০ ফেব্রুয়ারি সরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় এক মাসের জন্য সভাসমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিভিন্ন হলে সভা করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ৯৪ নবাবপুর রোডস্থ আওয়ামী মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের কিছু সদস্য নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার পক্ষে থাকলেও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে একই বিষয় নিয়ে পৃথক পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় সলিমুল্লাহ হলে ফকির শাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফজলুল হক মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত সভায় নেতৃত্ব দেন আবদুল মোমিন। শাহাবুদ্দিন আহমদের প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদকে এই সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেন আবদুল মোমিন এবং শামসুল আলম।


২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনাপ্রবাহ : ১৯৫২ 


সকাল ৯ টা : 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠ যেখানে অবস্থিত তার পাশে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ সে সময় ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত, ঢাকা মেডিকেল কলেজের গেটের পাশে ছাত্র-ছাত্রীদের আস্তে আস্তে একত্রিত হতে শুরু করে। 


সকাল ১১ টা : 

কাজী গোলাম মাহবুব, অলি আহাদ, আব্দুল মতিন, গাজীউল হক প্রমুখের উপস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ব্যাপারে ছাত্র নেতৃবৃন্দ এবং উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এস এম হোসেইন সহ কয়েকজন শিক্ষক সমাবেশ স্থলে গিয়ে উক্ত সমাবেশে অংশগ্রহন করেন এবং ১৪৪ ধারা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ছাত্রদের অনুরোধ করেন।


বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৩টা : 

উপস্থিত ছাত্রনেতাদের মধ্যে আব্দুল মতিন এবং গাজীউল হক ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে মত দিলেও সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় উপস্থিত সাধারণ ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং মিছিল নিয়ে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের অন্তর্গত) দিকে যাবার উদ্যোগ নেয়। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ এবং গুলিবর্ষণ শুরু করে। গুলিতে ঘটনাস্থলেই আবুল বরকত (ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মাস্টার্সের ছাত্র), রফিকউদ্দীন এবং আব্দুল জব্বার নামের তিন তরুণ মৃত্যুবরণ করেন। পরে সচিবালয়ে কর্মরত আবদুস সালাম হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। অহিউল্লাহ নামে ৯ বছরের একটি শিশুও পুলিশের গুলিতে মারা যায়। পুলিশের সাথে ছাত্রদের ৩ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলতে থাকে কিন্তু পুলিশ গুলিবর্ষণ করেও ছাত্রদের স্থানচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়।

বিকাল ৪টা : 

ছাত্রদের মিছিলে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঢাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার সাধারণ জনতা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে জড়ো হতে থাকে। গুলিবর্ষণের সংবাদ আইন পরিষদে পৌঁছালে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার ছয়জন আইন পরিষদ সদস্য আইন পরিষদ সভা মুলতুবি করে ঢাকা মেডিকেলে আহত ছাত্রদের দেখতে যাবার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনকে অনুরোধ করেন। সরকারি দলের সদস্য আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশও এই প্রস্তাবের স্বপক্ষে উচ্চকণ্ঠ হন। কিন্তু নুরুল আমিন সকল দাবি উপেক্ষা করে আইন পরিষদের অধিবেশন চালাবার নির্দেশ দেন। এর প্রতিবাদে পূর্ব বাংলার সদস্যরা পরিষদ থেকে ওয়াকআউট করেন। রাতের বেলা ছাত্র নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে ঢাকা শহরের প্রতিটি মসজিদে ও ক্লাবে পরদিন সকালে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েত হওয়ার আহ্বান সংবলিত লিফলেট বিলি করা হয়। 


২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২:

হাজার হাজার ছাত্র-জনতা সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হতে থাকে। উপস্থিত ছাত্র-জনতা ২১শে ফেব্রুয়ারি নিহতদের স্মরণে কার্জন হল এলাকায় একটি জানাজা নামাজ আদায় এবং একটি শোকমিছিল বের করে। শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর পুলিশ পুনরায় গুলি চালালে শফিউর রহমানসহ চারজন ঘটনাস্থলেই ত্যুবরণ করেন। উত্তেজিত জনতা রথখোলায় অবস্থিত সরকারপক্ষীয় পত্রিকা “দি মর্নিং নিউজ" এর অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। নুরুল আমিন পুলিশের পাশাপাশি আর্মি নামিয়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। আর্মি ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতা ভিক্টোরিয়া পার্কে (বর্তমানে বাহাদুর শাহ পার্ক) জমায়েত হয় এবং সেখানে অলি আহাদ, আব্দুল মতিন, কাজী গোলাম মাহবুব বক্তব্য রাখেন । উপায়ন্তর না দেখে নূরুল আমিন তড়িঘড়ি করে আইন পরিষদে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।


প্রথম শহিদ মিনার নির্মাণ : 

সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট পালিত হয়। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২৫শে ফেব্রুয়ারি সমগ্র পূর্ব-পাকিস্তানে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্র ছাত্রীরা বরকত শহিদ হওয়ার স্থানে ভাষা আন্দোলনে। শহিদদের স্মরণে একটি অস্থায়ী। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু করে। ভোর ৬টার সময় শহিদ স্মৃতিস্তম্ভের” নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয় এবং সকাল ১০টার দিকে শহিদ শফিউর রহমানের পিতাকে দিয়ে স্মৃতিফলকটি উন্মোচন করা হয়। সন্ধ্যায় শহিদ মিনারটি পুলিশ সম্পূর্ণ ভেঙে দেয়। এটিই ছিল প্রথম শহিদ মিনার নির্মাণ। 


বাংলা ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি লাভ : 

৭ মে ১৯৫৪ পাকিস্তান গণপরিষদ বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিয়ে একটি বিল পাশ করে। এরপর ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ বাংলা পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি লাভ করে। ২৩ মার্চ ১৯৫৬ এ সংবিধান কার্যকর হয়। 


আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভ : 

১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের ১৮৮টি দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। যা বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে বড়ো অর্জনগুলোর একটি। ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং জাতিসংঘভুক্ত সকল দেশ একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনে মত প্রদান করে।

Post a Comment

0 Comments

Close Menu