Ad Code

Responsive Advertisement

ইউক্রেন সংকট ও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত

ইউক্রেন সংকট 

  • ইউক্রেন সংকট 

  • ইউক্রেনের ইতিহাস 

  • রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল

  • রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব 

  • সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা
     
  • রাশিয়া-ইউক্রেনের সামরিক শক্তি র‌্যাংঙ্কিং

  • ইউক্রেনে রাষ্ট্রীয় পরিচয় 


রাশিয়া-ইউক্রেন


ইউক্রেন সংকট 

অনেক ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে ইউক্রেন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির টানাপোড়েনে দেশটি আজ সংকটের আবর্তে ঘূর্ণায়মান। সংকটাপন্ন ইউক্রেনকে নিয়ে আমাদের এ আয়োজন। 


ইউক্রেনের ইতিহাস 

ইউক্রেন পূর্ব ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। ইউক্রেনের পূর্বে রাশিয়া ও পশ্চিমে ইউরোপীয় দেশগুলো। রাশিয়ার পরে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ এটি। মোট সাতটি দেশ আর দুটি সাগরের সাথে সীমানা রয়েছে ইউক্রেনের । রাজধানী ও বৃহত্তম শহর কিয়েভ।রুশ বিপ্লবের পর, স্ব-নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ইউক্রেনীয় জাতীয় আন্দোলনের আবির্ভাব ঘটে এবং ২৩ জুন ১৯১৭ গণপ্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেয় । ১৯১৮ সালে ইউক্রেনে একটি বলশেভিক সাম্যবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা চার সদস্যের অন্যতম প্রজাতন্ত্র হিসেবে ইউক্রেন আত্মপ্রকাশ করে এরপর ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এ দেশের মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশের বেশি রুশ ভাষাভাষী। 


রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল

১৮ মার্চ ২০১৪ ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এটি দখল করার পর থেকে কৃষ্ণ সাগর এলাকায় নিজের অবস্থান বেশ মজবুত করে দেশটি। ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ছিল কৃষ্ণ সাগরের উত্তর উপকূলে ছোট দ্বীপ ক্রিমিয়া । ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগ এবং পশ্চিমাপন্থীদের ক্ষমতা গ্রহণের কারণে ক্রিমিয়ায় সেনা মোতায়েন করে রাশিয়া। তারপর ১৬ মার্চ ২০১৪ ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত এক গণভোটে ক্রিমিয়ার জনগণ রাশিয়ার সাথে একীভূত হয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন। ১৭ মার্চ ক্রিমিয়ার পার্লামেন্ট নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে এবং রুশ ফেডারেশনের যোগ দেওয়ার আনুষ্ঠানিক আবেদন জানায়। সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২১ মার্চ ২০১৪ ইতিহাসের সবচেয়ে স্বল্পায়ু রাষ্ট্র ক্রিমিয়া রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়।


রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব 

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যে ১৫টি দেশের জন্ম হয়, তার একটি ইউক্রেন। ইউক্রেন কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ‘ন্যাটো'তে যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ১ জানুয়ারি ২০১৬ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে মুক্ত বাণিজ্য এলাকার অর্থনৈতিক উৎপাদনের জন্য ইউক্রেনের আবেদনও রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ। রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনের নিকট স্বল্প মূল্যে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি স্থগিতকরণ এবং 'নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইন নির্মাণ প্রভৃতি কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব বিরাজমান । ইউক্রেন সরকার নর্থ ক্রিমিয়ান ক্যানেলে বাঁধ দিয়ে ক্রিমিয়ায় পানির জোগান বন্ধ করে দেয়। জনজীবন ও উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখতে কৃত্রিমভাবে পানির চাহিদা মেটাতে রাশিয়াকে গত সাত বছরে প্রায় ট্রিলিয়ন ডলার গচ্চা দিতে হয়। অন্যদিকে, এ দ্বন্দ্বে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। 


সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা 

জুলাই ২০২১ প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়া ও ইউক্রেনকে ‘এক জাতি’ বলে ঘোষণা দেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়াকে তিনি দেখেন 'ঐতিহাসিক রাশিয়া'র ভাঙন হিসেবে। ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ইউক্রেনের অন্তত ৭০টি সরকারি ওয়েবসাইট লক্ষ্য করে রাশিয়া হামলা চালায় বলে দাবি করে ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্ব। ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ রাশিয়া-মার্কিন নিরাপত্তা চুক্তি এবং মস্কো ও ন্যাটোর মধ্যে একটি নিরাপত্তা চুক্তির খসড়া প্রকাশ করা হয়। এতে কিছু সুনির্দিষ্ট দাবি জানায় রাশিয়া। ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ভ্লাদিমির পুতিন বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সংঘাত এড়াতে চায় রাশিয়া। আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ পছন্দ করি না। আর "আমরা এটা চাইও না। ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ভ্লাদিমির পুতিন ও জো বাইডেনের মধ্যে এক ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উভয় নেতাই ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ২১ জানুয়ারি ২০২২ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় কূটনৈতিক পর্যায়ের বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে চলমান উত্তেজনা হ্রাসের ব্যাপারে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এমন সময়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় একই দিনে ৯০ টন সামরিক সরঞ্জাম পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। 


রাশিয়া-ইউক্রেনের সামরিক শক্তি র‌্যাংঙ্কিং: 

২০২২ সালে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্সের সামরিক শক্তির র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের অবস্থান ২২তম। দেশটির সামরিক বাজেট ৯৬০ কোটি মার্কিন ডলার। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর মোট জনবল ১২ লাখ ৪৫ হাজার। অন্যদিকে, রাশিয়া আছে সামরিক শক্তির র‍্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে। দেশটির প্রতিরক্ষা বাজেট ৪,২১২ কোটি মার্কিন ডলার। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মোট জনবল ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার। সক্রিয় সদস্য ১০ লাখ ১৪ হাজার, রিজার্ভ সদস্য ২০ লাখ।


ইউক্রেনে রাষ্ট্রীয় পরিচয় : 

Ukraine আয়তন : ৬,০৩,৭০০ বর্গ দ কিমি । লোকসংখ্যা : ৪.৩৭ কোটি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার : -০.৫%। সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় : খ্রিষ্টান (৮৩.৮%) । সাক্ষরতার হার (১৫+) : ১০০%। মাথাপিছু আয় : ১৩,২১৬ মার্কিন ডলার। গড় আয়ু : ৭২.১ বছর। স্বাধীনতা লাভ : ২৪ আগস্ট ১৯৯১। স্বাধীনতা দিবস :২৪ আগস্ট। জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ : ২ মার্চ ১৯৯২।


#ইউক্রেন

#রাশিয়া

#রাশিয়া_ইউক্রেন_দ্বন্দ্ব

Post a Comment

0 Comments

Close Menu